এনএনবি নিউজ
সৌদি আরবের রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় ৬ বছর পর দেশে ফিরেছেন গৃহকর্মী নুর নাহার। একই সাথে দূতাবাসের প্রচেষ্টায় নুর নাহারের নিয়োগকর্তা সৌদি নাগরিকের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬ বছরের বেতন-ভাতার প্রায় ১৯ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানায়।
মেয়ে নুর নাহারকে ফিরে পেয়ে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া নিবাসী আবুল কালামের পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। ২০১৬ সালে মানসিক ভারসাম্যহীন বেকার স্বামী এবং একমাত্র কন্যাকে রেখে ভাগ্য ফেরাবার আশায় গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে যান নুর নাহার। যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দীর্ঘ ছয় বছর অতিবাহিত হওয়ায় তাকে ফিরে পাওয়ার আশা একরকম ছেড়েই দেয় তার পরিবার। অপরদিকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে নুর নাহারও অনেকটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
বিষয়টি বাংলাদেশ দূতাবাসের নজরে এলে নুর নাহারকে রিয়াদের হোতা বনি তামিম এলাকা থেকে উদ্ধার করে সেইফ হোমে আশ্রয় দেওয়া হয়। তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে তিনি বাংলাদেশে তার ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। এ অবস্থায় পাসপোর্টে উল্লেখ করা ঠিকানা ও ছবি পাঠিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহায়তায় পরিবারের সঙ্গে দূতাবাসের শ্রম-কল্যাণ উইংয়ের যোগাযোগ হয়।
নুর নাহারের বাবা আবুল কালাম জানান, সৌদি আরবে যাওয়ার পর দীর্ঘ ছয় বছরে দেশে কোনো টাকা পাঠাননি নুর নাহার। এ প্রেক্ষিতে দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ উইংয়ের পক্ষ থেকে নুর নাহারের সৌদি নিয়োগকর্তাকে খুঁজে বের করা হয়। দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ উইংয়ের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলে সৌদি নিয়োগকর্তার কাছ থেকে নিয়োগচুক্তির শর্ত মোতাবেক ছয় বছরের সমুদয় পাওনা বেতন ভাতা বাবদ মোট ৬৮ হাজার ১৭ সৌদি রিয়াল (১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৬৪৮) টাকা আদায় করা সম্ভব হয়।
নুর নাহারের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সোনালী ব্যাংক প্রতিনিধির সহায়তায় তার নামে সংশ্লিষ্ট সোনালী ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। ওই একাউন্টে তার সমুদয় পাওনা টাকা জমা করা হয়। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) নুর নাহার বাংলাদেশে তার পাওনা অর্থ বুঝে পেয়েছেন।
দীর্ঘ ৬ বছর রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে নুর নাহারকে ফিরে পেয়ে এবং তার কষ্টার্জিত সমুদয় পাওনা টাকা বুঝে পেয়ে তার পরিবারে এখন আনন্দের বন্যা। তার বাবা আবুল কালাম আনন্দের আতিশয্যে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। এছাড়া দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
COMMENTS