আব্দুর রহমান মিন্টু , রংপুর
রংপুরে বাংলাদেশে বসবাসরত উর্দুভাষীদের সংগঠন এসপিজিআরসি-বাংলাদেশ ৩দিনব্যাপি ১৭তম কাউন্সিল অধিবেশনের শেষে এসপিজিআরসি-বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বাংলাদেশ ব্যাপী সকল শাখা কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষনা করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নির্বাচনে জেলা পর্যায়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে কার্যনির্বাহী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম. শওকত আলী ও সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদকে মনোনীত করে ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়াও শাখা কমিটি গুলো পূণঃগঠনের জন্য ৫ সদস্যে বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। যা এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নিদের্শ দেয়া হয়।
গতকাল রোববার বিকেলে নগরীর পানসি কমিউনিটি সেন্টারে ৩ দিন ব্যাপি ১৭তম কাউন্সিল অধিবেশনের শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কার্যনির্বাহী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম. শওকত আলী এর পক্ষে সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ।
সংবাদ সম্মেলনে লেখিত বক্তব্যে হারুন-অর-রশিদ বলেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় ১৭তম কাউন্সিল অধিবেশন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক এলজিইডি প্রতিমন্ত্রী এ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর পানসি কমিউনিটি সেন্টারে অধিবেশনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন অতিবাহিত হয়। উক্ত এই ৩ দিনের কাউন্সিল অধিবেশনে বাংলাদেশের ১৩টি জেলায় সংগঠনের স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্বদানকারী প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহন করেন। বাংলাদেশে বসবাসরত উর্দুভাষীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণ সহ রাষ্ট্রিয়ভাবে নাগরিকত্বে স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে ভবিষ্যতের সাংগঠনিক পরিকল্পনা ও কার্যক্রম নির্ধারনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনায় কাউন্সিলে অংশ গ্রহনকারী নেতৃবৃন্দ কতগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরোও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গত ০৬-১১-২০২১ইং তারিখ দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় পরিদর্শনকালে ক্যাম্পে বসবাসকারী বিহারীদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, আবাসনের সুবিধা, নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং মানবিক বিষয় বিবেচনাক্রমে তাদের সুবিধাজনক স্থানে স্থানান্তর করার নির্দেশনা প্রদান করেন। গত ১৮/০৪/২০১৫ তারিখ বিহারীদের পূর্ণবাসনে এসপিজিআরসি-বাংলাদেশ এর প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠকে আশ্বস্তকরণ এবং সর্ব সদ্য গত ০৬/১১/২০২২ তারিখে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাথে একটি ইভেন্ট গণভবন থেকে দেয়া বক্তব্যে বিহারীদের জীবনমান উন্নয়নে তাঁর দৃঢ় প্রতিজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁর দেয়া সেই আশার আলোকে আমরা চাই নাগরিকত্বের স্বীকৃতি প্রদান, নাগরিক সুযোগ সুবিধা (মৌলিক অধিকার)। নিশ্চিতকরণ সহ স্বসম্মানে পূর্নবাসন কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা হোক। বাংলাদেশ ব্যাপি বিহারীদের সম্পূর্ণ পূর্ণবাসন না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পিতা বিশ্বনন্দিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া বিহারীদের জন্য বাসস্থান, ক্যাম্পে বিদ্যুৎ, পানি, নিরাপত্তাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা বহাল রাখার আহব্বান জানানো হয়
এই সংবাদ সম্মেলনে। এছাড়াও খালিশপুর (খুলনা), ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ যে সমস্ত জেলায় দেশ বিভাগের পর ভারত থেকে যারা হিজরত করে এসেছিলেন তাদেও জন্য হাউজিং নির্মাণ করে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছিল। যা বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর পরিত্যাক্ত সম্মত্তি হিসাবে সরকারের আওতাভুক্ত হয়ে যায়। ঐ সকল হাউজিং এর বাড়ীতে এখনও মূল বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির উত্তরসূরীরা (সন্তান, ভাই, বোন বা পরিবারের অন্যান্য সদস্য) বসবাস করছে। সে হাউজিং এর বাড়ী গুলো বিনামূল্যে অথবা স্বল্প মূল্যে তাদের বরাদ্দ দিয়ে বিহারী পূর্ণবাসন কার্যক্রমের আওতায় আনার জন্য বিশেষ আবেদন জানানো হয়। দেশ ব্যাপী সকল ক্যাম্প যেগুলো বাংলাদেশ রেলওয়ে, কেডিএ, হাউজিং এস্টেট, সিটি কর্পোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদসহ অন্যান্য প্রশাসনের আওতাভুক্ত সে সকল ক্যাম্প সমূহকে উচ্ছেদ না করার জন্য আহব্বান জানানো হয়। অত্র ১৭তম কাউন্সিলে গৃহীত সিদ্ধান্ত গুলো সরকারের বরাবর অতি সত্ত্বর দাখিল/পেশ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় এবং দাখিল করার ১৫ দিনের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোন ধরনের আশ্বাস না পাওয়া যায়, তাহলে এসপিজিআরসি-বাংলাদেশ পরবর্তিতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ঘেরাও, আত্মহুতি, মানবন্ধন, অনশন ধর্মঘটসহ বিভিন্ন ধরণের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী নেওয়ার জন্য এসপিজিআরসি-বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয়
কমিটি থেকে এসপিজিআরসি-বাংলাদেশ এর সকল শাখার মতামতের ভিত্তিতে যে কোন কর্মসূচী গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেনেভা ক্যাম্প চেয়ারম্যান এস কে গোলাম জেলানী, এসপিজিআরসি কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মোঃ শাহিদ, খুরশিদ আলম, ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ ছোটু, মোঃ আলতাফ, এসপিজিআরসি চট্রগ্রামের যূগ্ম সম্পাদক সোহেল আশরাফি, রাউসা বাধ কলোনীর সম্পাদক মোঃ রেহান, ফিরোজশাহ কলোনীর সম্পাদক মোঃ টুলু, এসপিজিআরসি খুলনার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, আদমজির সভাপতি লিয়াকত হোসেন, চিফ ভোলান্টিয়ার কমান্ডার মোঃ ইসমাইল ফকিরা, এসপিজিআরসি রংপুর এর সভাপতি মোঃ শরফুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সালাহউদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক মোঃ তৈয়ব আলী, কোষাধ্যক্ষ মোঃ নাসিম, আঞ্চলিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, এম. এ আউয়াল, হীড এর অর্থ সম্পাদক ওয়াকিল আহমেদ মুন্না, সাব্বির হোসেনসহ এসপিজিআরসি কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মীরপুর, মোহাম্মদপুর, আদমজি, জেনেভা ক্যাম্প, চট্টগ্রাম, খুলনা , সৈয়দপুর, বগুড়া যশোর এর প্রতিনিধিবৃন্দ।
COMMENTS