এনএনবি নিউজ
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় আরও ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে।
গতকাল রবিবার বিকেলে বোদা উপজেলার ৬ নম্বর মাড়েয়া ইউনিয়নের আওলিয়া ঘাটে এ ভয়াবহ নৌ দুর্ঘটনা ঘটে।
আজ সোমবার ভোর থেকে স্থানীয় এবং ৪টি ডুবুরির দল মরদেহ উদ্ধারে কাজ করছে। সোমবার আরও ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বোদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শওকত এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পঞ্চগড়ে নৌকাডুবির ঘটনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় প্রথম দিন শিশু, নারীসহ ২৪ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এরমধ্যে ১২ নারী, আট শিশু ও চার পুরুষের লাশ রয়েছে। এ ঘটনায় ৩০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরে (নদীর অপরপাড়ে) মহালয়া উপলক্ষে এক বিশাল ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে জেলার বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন শ্যালো মেশিনচালিতে একটি নৌকাযোগে মন্দিরে যাচ্ছিলেন। নদীর মাঝপথে অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নৌকাটি উল্টে যায়।
এ সময় সাঁতার জানা যাত্রীরা তীরে উঠে আসতে পারলেও বেশিরভাগ নারী ও শিশু পানিতে ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে এসে অনেককে উদ্ধার করে। পরে জেলা, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সবাই এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও ধনেশ চন্দ্র জানান, করতোয়ার পাড়ে শিশু ও নারীসহ ১৭ জনের লাশ দেখেছেন। এছাড়া উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ধারকারীরা ২৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। তবে তাদের নাম পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এএসএম রাজিউল করিম রাজু বোদা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শিশু ও নারীসহ সাত জনের লাশ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোলেমান আলী নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরমধ্যে ১২ নারী, আট শিশু ও চার পুরুষের লাশ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, নৌকাটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। তবে ফায়ার সার্ভিসের অভিযান শেষ না হলে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা জানানো যাচ্ছে না। তাৎক্ষণিকভাবে মৃতদের সৎকারে ২০ হাজার করে এবং আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, নদী দিবসে জেলায় ভয়াবহ নৌকাডুবি। এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের মাঝে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। আর অসুস্থদের চিকিৎসা খরচ বহন করা হবে।
COMMENTS