ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডাব্লিউবি) কর্মসূচি অসহায় নারীদের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, পুষ্টিহীনতা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট অ্যাপ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, দেশের গ্রামীণ দুঃস্থ নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে একটি বৃহত্তর সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি। যা নারীদের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, পুষ্টিহীনতা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা দূর করে আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন ও অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিল বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সূচির প্রতিনিধিরা।
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বেনিফিট কার্যক্রমে উপকারভোগী হবেন অসচ্ছল, বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারী, যাদের পরিবারের নিয়মিত উপার্জনক্ষম সদস্য বা নিয়মিত আয় নেই। এছাড়া ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সী ভূমিহীন ও যেসব নারীর নিজ মালিকানা জমির পরিমাণ ০.১৫ শতকের কম।
তিনি বলেন, যেসকল পরিবার দৈনিক দিন মজুর হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে ও মাটির দেওয়াল পাটকাঠি বা বাঁশের তৈরি ঘরে থাকে, যে পরিবারে কিশোরী বা ১৫-১৮ বছর বয়সী মেয়ে, অটিজম, প্রতিবন্ধি সন্তান রয়েছে নারীরা অগ্রাধিকার পাবেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হালনাগাদ করা উপজেলার পোভার্টি ম্যাপ অনুযায়ী উপজেলা ভিত্তিক উপকারভোগী নির্বাচন করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের ৬৪ জেলার ৪৯২ উপজেলায় সকল ইউনিয়ন ডিডব্লিউবি কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। পৌরসভা ও সিটি কর্পোরশন এলাকায় ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট বাস্তবায়ন বা কার্ড দেওয়া হবে না। ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর কোন ইউনিয়ন পৌরসভাসিটি কর্পোরশনের অন্তর্ভুক্ত হলেও উপকারভোগীদের খাদ্য সহায়তা ও প্রশিক্ষণ চালু থাকবে।
সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, উপকারভোগীরা সঞ্চয় ব্যবস্থাপনার আওতায় প্রতি মাসে নিজ অ্যাকাউন্টে ২৪০ টাকা সঞ্চয় জমা করবেন। যা হবে ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনার জন্য মূলধন গঠন। সঞ্চয়কৃত অর্থ এবং প্রশিক্ষণে প্রাপ্ত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে তারা দুই বছর পরে নিজেরাই ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে পারবেন। দেশের অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট কার্যক্রমের এই ১০ লাখ ৪০ হাজার নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
উপকারভোগীরা ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে দুই বছর প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবেন। ২০২৫ - ২০২৬ সাল থেকে পনেরো লাখ উপকারভোগী এই কর্মসূচি আওতায় সহায়তা দানের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, তথ্য আপা, স্থানীয় কম্পিউটার এর দোকান হতে, ১০৯ ও ৩৩৩ হট লাইন নাম্বারে কল করে আবেদন করতে পারবেন। পার্বত্য ও দুর্গম এলাকা যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ নেই সেখানে মোবাইল অ্যাপ ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট কার্যক্রমের মাধ্যমে অফলাইনে আবেদনের সুযোগ রয়েছে।
COMMENTS