যশোরে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমির প্রেসিডেন্ট প্যারেডে যোগ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বিএএফ একাডেমিতে পাসিং আউট কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেছেন। করোনাকালীন অচলাবস্থার পর ঢাকার বাইরে আজ প্রথমবারের মতো সরাসরি জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে তিনি যশোর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, এই জনসভায় ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটানোর লক্ষ্য তাদের রয়েছে। যশোরের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের উপজেলাসহ খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এই জনসভায় যোগ দেবেন। আজ সকাল থেকেই মানুষের ঢল দেখা গেছে জনসভাস্থল অভিমুখে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যশোর সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের নিজ এলাকা শহরের কাজীপাড়া থেকে একটি বিশাল মিছিল সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে স্টেডিয়াম অভিমুখে যায়। ভুভুজেলা বাজিয়ে নেচে নেচে-গেয়ে মিছিলটি জনসভার স্থান যশোর শামস-উল হুদা স্টেডিয়াম অভিমুখে যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিলে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের ছবি সম্বলিত সাদা গেঞ্জি এবং লাল-সবুজ টুপি পরিহিত অসংখ্য মানুষ অংশ নেন। এ ছাড়া যশোর শহরের রতন করবার বিবি রোড এবং অন্য এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জনতা সমাবেশস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে।
এদিকে যশোরে প্রধানমন্ত্রীর আগমন এবং জনসমাবেশ ঘিরে নিশ্চিত নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে প্রশাসন। জনসভাস্থলে পাঁচ স্তর এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে যশোর জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর বলেন, ‘জনসভাস্থলে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে। গোটা যশোর জেলার ৮ উপজেলা গোয়েন্দা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে। বিভিন্ন স্তরে চৌকস অফিসার ও ফোর্স দায়িত্ব পালন করছেন।’
প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ ঘিরে উৎসবমুখর যশোর, ৫ স্তরের নিরাপত্তা
দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার যশোরে সমাবেশে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাকালীন অচলাবস্থার পর ঢাকার বাইরে আজ প্রথমবারের মতো সরাসরি জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। এ উপলক্ষে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে দলে দলে লোক মিছিল নিয়ে জনসভাস্থল শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামের দিকে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে যেন উৎসবের শহরে পরিণত হয়েছে যশোর।
জেলা প্রশাসন ও দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে যশোর মতিউর রহমান বিমানঘাঁটিতে এসে নেমেছেন। যশোর বিএএফ একাডেমিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন। এরপর তিনি যশোর শহরের জনসভায় যাবেন। সেখানে বেলা ২টার দিকে যশোর শামস্–উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দেবেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় এ সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সভামঞ্চের সামনে জায়গা পেতে সকাল ৯টা থেকেই যশোর জেলার ৮ উপজেলাসহ আশেপাশে পাশের জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসছেন। অনেকে ব্যাগে করে দুপুরের খাবারও নিয়ে এসেছেন। রং-বেরংয়ের গেঞ্জি পরে আর লাল সবুজ শাড়ি পড়ে নেতাকর্মীরা যশোরের বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থল যশোর স্টেডিয়ামে আসতে শুরু করেছেন।
এ ছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের অনুসারীদের ছবি সংবলিত গেঞ্জি পরে এরই মধ্যে নেতাকর্মীদের খণ্ড খণ্ড মিছিল জনসভায় জড়ো হতে শুরু করেছে। ব্যানারসহ মাথায় ব্যান্ড লাগানো নেতাকর্মীদের অনেকের হাতে শেখ হাসিনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রহমানের প্ল্যাকার্ডও বহন করছেন।
এদিকে যশোরে প্রধানমন্ত্রীর আগমন এবং জনসমাবেশ ঘিরে নিশ্চিত নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে প্রশাসন। জনসভাস্থলে পাঁচ স্তর এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে যশোর জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর বলেন, ‘জনসভাস্থলে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে। গোটা যশোর জেলার ৮ উপজেলা গোয়েন্দা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে। বিভিন্ন স্তরে চৌকস অফিসার ও ফোর্স দায়িত্ব পালন করছেন।’
যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ রুপি সরকার বলেন, ‘জনসভা উপলক্ষে গোটা যশোর জেলাকে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আনা হয়েছে। শহরতলি থেকে শুরু করে গোটা এলাকায় প্রশিক্ষিত ফোর্স নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জন্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাবেষ্টনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে কয়েক শ’ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। কয়েকটি ডগ স্কোয়াড টিমও কাজ করছে। পাঁচ স্তরের বাইরেও গুগল ও স্যাটেলাইট সহায়তা নিয়েও নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা জুড়ে রাস্তায় নিয়োজিত থাকছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।’
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সমগ্র যশোর জেলা ইতোমধ্যেই নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার। তিনি বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। সাদা পোশাকেও অনেকে ডিউটিতে নিয়োজিত রয়েছেন।’
‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও জনসমাবেশে যদি কোনো পুলিশ সদস্য দায়িত্বে বিন্দুমাত্র অবহেলা করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ ডিউটিতে নিয়োজিত সব পুলিশ সদস্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন,’ বলেও জানান প্রলয় কুমার জোয়ারদার।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা সবাই ডিউটিতে অবশ্যই উত্তম পোশাক পরিধান করবেন। যেহেতু বাংলাদেশ পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী, সুতরাং আমাদের প্রত্যেকেরই সেটা মেনে চলতে হবে।’
দলীয় সূত্র জানায়, আজ যশোর, ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম এবং ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে সশরীরে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এর আগে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
COMMENTS