রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলাধীন ঘিরনই মালতোলা বি,এস,ডি দাখিল মাদ্রাসার সুপার এআর মোফাজ্জল হোসেন। তার নিয়োগ পত্র থাকলেও বর্তমানে তিনি সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কাজ না হওয়ায় চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, মহাপরিচালক বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা, রংপুর জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন।
জানা যায়, ঘিরনই মালতোলা বি,এস,ডি দাখিল মাদ্রাসাটি ১৯৮৬ সালে এআর মোফাজ্জল হোসেনের পিতা মৃতঃ শহরউল্লা’র দানকৃত জমির উপর স্থাপিত হয়। যা স্বীকৃতি লাভ করার পর হতে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ১৯৮৭-৮৮ সালে পর পর দুইবার পরিক্ষায় কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী পাশ না করায় মাদ্রাসাটির এমপিও স্থগিত হয়। সে সময় মাদ্রাসার সুপার, সহ সুপার, সহকারী শিক্ষক ও সহকারী মৌলভীসহ মোট চারজন মাদ্রাসা হতে ইস্তফা দিয়ে চলে যায়। মোফাজ্জল হোসেন বিধি মোতাবেক ১৯৮৯সালে সহ সুপার হিসেবে যোগ দেয়। এরপর সুপার পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও কেউ আবেদন না করায় তিনি সুপার পদে যোগদান করেন। এরপর শিক্ষক নিয়োগ ও বেতন চালুর লক্ষে হাইকোর্টে রিট করেন যাহার নং ৭৩৪৫/১৪। হাইকোর্ট মাদ্রাসার পক্ষে রায় প্রদান করলে সরকারের পক্ষে আপিল করলে সুপ্রিম কোর্ট উক্ত রায় স্থগিত করেন। এ সময় সুপার মোফাজ্জল অসুস্থ হয়ে পড়লে সে সময়ের সহ সুপার তজিরুল ইসলাম পুনঃরায়ের জন্য আবেদন করলে ২০১৮ সালে সকল কর্মচারীর বেতন-ভাতা চলমান রাখার রায় প্রদান করেন।
এরই মধ্যে সহ সুপার তফিজুল ইসলাম সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করলে মাদ্রাসার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সহকারী শিক্ষক শেফাজুল ইসলাম নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে মোফাজ্জল হোসেন সুস্থ হয়ে ফিরে কাগজপত্র ফেরত চাইলে শেফাজুল ইসলাম নিজেকে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার দাবি করে কাগজপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর হতে মোফাজ্জল হোসেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনলাইন থেকে তুলে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এদিকে শেফাজুল ইসলামের যোগ সাজসে এডহক কমিটির আগের শিক্ষক প্রতিনিধি মৌলভী শিক্ষক একরামুল হক, তার নাম বাতিল করে মাদ্রাসার শিক্ষক নয় একজন মহিলা নুসরাত আক্তার পারভীনকে শিক্ষক প্রতিনিধি বানায়।
এ ব্যাপারে এআর মোফাজ্জল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি মাদ্রাসার সুপার হয়েও নিজের কাজ সঠিকভাবে করতে পারছিনা। সকলে দ্বারে দ্বারে ঘুরে কাজ না হওয়ায় বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন দিয়েছি ন্যায় বিচারের জন্য।ভারপ্রাপ্ত সুপার শেফাজুল ইসলাম বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব পালন করছি। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের নির্দেশনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাকে দায়িত্ব প্রদান করেন। সুপার নিয়োগ হলেই আমি পদ ছেড়ে দিবো।
বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সাইদ বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কাগজের প্রেক্ষিতে তাকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর অভিযোগের কারণে এডহক কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধিকে পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে তদন্ত চলছে অল্প সময়ের মধ্যে বসে মাদ্রাসার সকল সমস্যা সমাধান করা হবে।মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল্লাহ বলেন, মোফাজ্জল হোসেন কখনও মাদ্রাসার সুপার ছিলেন না। তিনি সহকারী মৌলভী হিসেবে রয়েছেন। তার সময়ই সুপার হিসেবে একজন ছিলেন। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে শেফাজুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেয়া হয়। আর শিক্ষক প্রতিনিধি একরামুল হকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ থাকার কারণে জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশে তাকে সরিয়ে অন্য একজনকে নেয়া হয়েছে।
COMMENTS