রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকারিয়া আলম শিপলুকে সাময়িক ভাবে স্বপদ থেকে বহিষ্কার করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৫নং সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাকারিয়া আলমের বিরুদ্ধে রংপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত সি আর ১৭২/১৭ নং মামলায় গত ২০/০২/২০২৩ তারিখের রায়ে বিজ্ঞ আদালত দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪২০ ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে এক বছর সশ্রম কারাদন্ড ও দশ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছে। তাকে তার স্বীয় পদ হতে অপসারণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ ধারা ১৩ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন কার্যক্রম আরম্ভ শুরু হয়েছে। রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর সাধারণ আসনের কাউন্সিলর জাকারিয়া আলমকে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ ধারা ১২ এর উপ-ধারা (১) অনুযায়ী তার স্বীয় পদ হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে গত শুক্রবার (৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় নগরীর বিনোদপুর রেলক্রসিং এলাকার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কাউন্সিলর জাকারিয়া আলম শিপলু সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি জালিয়াতি করে রেজিস্ট্রি বায়না দলিল করা সংক্রান্ত মামলায় এক বছর দন্ডপ্রাপ্ত ও একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।
পরদিন (৮ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১টার দিকে রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় তাকে। সেখানে চারটি ওয়ারেন্টভুক্ত মামলার মধ্যে তাকে তিনটিতে জামিন দেওয়া হলেও একটিতে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।গত ১ এপ্রিল যমুনা টেলিভিশনের অপরাধ অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠান ক্রাইম সিনে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমি জালিয়াতি করে রেজিস্ট্রি বায়না দলিল করা সংক্রান্ত মামলায় এক বছর কারাদন্ড প্রাপ্ত ও একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি কাউন্সিলর জাকারিয়া ইসলাম শিপলুর বিরুদ্ধে জমি দখল, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। এ ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হয়ে কাউন্সিলর শিপলু গত বুধবার (৫ এপ্রিল) সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মাজহারুল মান্নানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন দাখিল করেন। এরপর দিন রংপুরের সাংবাদিক সমাজ মানববন্ধন সমাবেশ করে মামলার আবেদন প্রত্যাহার এবং কাউন্সিলর শিপলুর গ্রেপ্তার দাবি করেন। তবে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিঞা জানান, আমরা এখন পর্যন্ত অফিসিয়ালি কোনো চিঠি পাইনি।
অন্যদিকে বহিষ্কারের কোনো চিঠি পায়নি বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকারিয়া আলম শিপলু।
COMMENTS