রংপুর জেলার একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ব ভারীশিল্প শ্যামপুর চিনিকল বন্ধেরপ্রতিবাদে বুধবার সকাল ১১:৩০টায় স্থানীয় কাচারি বাজারে মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।শ্যামপুর চিনিকল রক্ষা কমিটির সমন্বয়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে এবং আনোয়ার হোসেন বাবলুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত হোসেন,অশোক সরকার,কুমারেশ রায়, শাহীন রহমান, গৌতম রায়, ডা: অধ্যাপক সৈয়দ মামুনুর রহমান, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হককানী, মনিরুজ্জামান, উমর ফারুক, আমিনউদ্দিন বিএসসি, আখচাষী আলতাফ হোসেন, পুষ্প রঞ্জন বর্মণ, জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন দীপক রায়, শেখর রায়, মোফাখ্খারুল ইসলাম নবাব, জুবায়ের আলম জাহাজী, মজিবর রহমান, এডভোকেট ইলিয়াস আহমেদ। সমাবেশ শেষে বহুমুখী ও আধুনিকায়ন করে শ্যামপুর চিনিকল চালুর দাবিতে রংপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর ৪ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয় এবং একটি বিক্ষোভ মিছিল মহানগরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে শাপলা চত্ত¦রে এসে শেষ হয়।বাংলাদেশ চিনি এবং খাদ্যশিল্প কর্পোরেশন চলতি মৌসুমে লোকসানের অজুহাতে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই শ্যামপুরসহ ৬টি চিনিকল বন্ধ করে দেয়। আখমাড়াইয়ের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন থাকা সত্বেও সরকারি সিদ্ধান্তে এখানকার আখ ৬৫কিলো দূরে জয়পুরহাট চিনিকলে নিয়ে যাবে। জয়পুরহাট চিনিকলে প্রতিদিন যে পরিমাণ আখ ক্রয়ের কথা ঐ পরিমাণ আখ ক্রয় করছে না। ইতোমধ্যে আখের পরিণত বয়স ১৪ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এভাবে জয়পুরহাট চিনিকলে এখানকার উৎপাদিত আখ নিতে অন্তত ৬ মাস সময় লাগবে। ফলে আখ মরে শুকনো খড়িতে পরিণত হবে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, পরিবহন খরচ, আখ মাড়াইয়ে বেশি সময় নেয়ায় আখের রস শুকিয়ে যাওয়া, রাস্তায় নানা ধরনের ঝুঁকির কারণে আখচাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। দেশে চিনির চাহিদা বছরে প্রায় ২০ লক্ষ মেঃ টন। সেখানে ১৫টি চিনিকলে গত মৌসুমে উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৬০ হাজার মেঃ টন। অথচ সরকার এই বিপুল পরিমাণ চাহিদার কথা বিবেচনায় না নিয়ে পাটকলের ন্যায় দেশী-বিদেশী লুটেরাদের স্বার্থে চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।আধুনিকায়নের মাধ্যমে চিনিকল চালুর দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ চিনিকলের লোকসানের জন্য লুটপাট-দুর্নীতি,অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও শাস্তির জোর দাবি জানান।সেই সাথে লাভজনক দামে কৃষকের কাছ থেকে আখ ক্রয় এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা, পেনশন পরিশোধেরও দাবি জানান ও চিনিকলকে কেন্দ্র করে বহুমুখী শিল্প গড়ে তোলার তাগিদ দেন।সমাবেশে বক্তাগণ শ্যামপুর চিনিকল রক্ষার আন্দোলনকারীদের স্থানীয় প্রশাসনের ভয়ভীতি,পুলিশ-প্রশাসনের হুমকি প্রদানের তীব্র নিন্দা জানান। উল্লেখ্য, দাবি মানা না হলে আগামি ২৪ জানুয়ারি রোববার আখচাষী, চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীসহ সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রংপুর নগর থেকে বদরগঞ্জ পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি সমাবেশ থেকে ঘোষণা করা হয়। পদযাত্রা সফল করতে আখচাষ অঞ্চলসহ রংপুরের বিভিন্ন স্থানে হাটসভা,পথসভা,জনসংযোগ,মিছিল,মিটিং প্রভৃতি কর্মসূচী অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
এনএনবি নিউজ/ ডিকে