এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে পিকে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালকে ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
দুদক সূত্রে জানা যায়, পিকে হালদারের সঙ্গে যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশে অবৈধ ব্যবসা ও কর্মকা-ের মাধ্যমে জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানে করতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে দুদকে আসতে বলা হয়।
দুদক উপপরিচালক তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত নোটিশে গত ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় তাকে হাজির হতে বলা হয়। দুদকের চিঠি পাওয়ার পরও তিনি যথাসময় হাজির হননি। ব্যক্তিগত কোনো সমস্যার কারণে হাজির হতে পারেননি বা কবে হাজির হতে পারবেন- এ বিষয়েও লিখিত বা ফোনে দুদককে অবহিত করেননি অবন্তিকা।
মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গত ৪ জানুয়ারি পি কে হালদারের আরেক ‘সহযোগী’ শংখ ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শংখ ব্যাপারীর নামে ধানম-ি এলাকায় একটি ‘বিলাসবহুল’ ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়, যা পি কে হালদারের টাকায় কেনা বলে দুদকের ভাষ্য।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।
এই চার কোম্পানি হল- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।
এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।
এর মধ্যে আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে গত বছরের শুরুতে পি কে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক তার ২৭৫ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, পি কে হালদার তার নিজের, আত্মীয়দের, বন্ধু ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে আটটি কোম্পানিতে ৬৭ কোটি ৩৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৯৯ টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যার ‘বৈধ কোনো উৎস’ অনুসন্ধানে মেলেনি।
এর মধ্যে সুখাদা লিমিটেড নামের একটি কোম্পানিতে অবন্তিকা বড়াল, প্রীতিষ কুমার হালদার এবং সুসমিতা সাহার নামে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে, যা আসলে পি কে হালদারের টাকা বলে দুদকের ধারণা।
পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে। তার মা লীলাবতী হালদার এবং অবন্তিকা বড়ালসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই কোর্ট।
এনএনবি নিউজ/ ডিকে